১২০ বছরের ইতিহাসে একদিনে ফিনাইল উৎপাদনে রেকর্ড করল বেঙ্গল কেমিক্যালস

১২০ বছরের ইতিহাসে ফিনাইল উৎপাদনে রেকর্ড করল বেঙ্গল কেমিক্যালস | গত রবিবার পানিহাটির কারখানায় ৫১ হাজার ৯৬০টি বোতল ফিনাইল তৈরী হয়েছে | করোনা পরিস্থিতির আগে সাধারণত দিনে ১৫ হাজার বোতল ফিনাইল তৈরী হত বেঙ্গল কেমিক্যালসে | কিন্তু করোনার জন্যে ফিনাইলের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে বাজারে | চাহিদা মেটাতে গত কয়েকমাস ধরে দিনে গড়ে ৩৮০০০ বোতল ফিনাইল তৈরী করছিল তারা | কিন্তু রবিবার সব রেকর্ড ভেঙে যায় | সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি রবিবার ও ছুটির দিনেও রোজ কাজ চলবে বেঙ্গল কেমিক্যালসে |
গত ২ আগস্ট ছিল আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ১৫৯ তম জন্মদিন।তাকে সম্মান জানাতে ২ আগস্ট বেঙ্গল কেমিক্যালস বাজারে এনেছিল নতুন স্যানিটাইজার – বেনস্যানি (BENSANI) | অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার বেনস্যানি বর্তমানে ২০০ মিলিলিটার, ৫০০ মিলিলিটার ও ৫ লিটারের বড় বোতলে পাওয়া যাচ্ছে | দামও রাখা হয়েছে সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে | বাজারেও বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে এই স্যানিটাইজার | বেনস্যানির প্রস্তুতি থেকে শুরু করে উৎপাদন, প্যাকেজিং সবটাই করেছে বেঙ্গল কেমিক্যালস |
পৃথিবী বিখ্যাত রসায়নবিদ হয়েও আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় হয়েছিলেন ব্যবসাদার, বাঙালিদের ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রেরণা যোগাতে, স্বাবলম্বী করতে, বাঙালির মর্যাদা রক্ষার্থে। গবেষণাগারে ব্যস্ত থেকেও স্বদেশী ভাবধারায়, এ দেশে ওষুধ শিল্পের অগ্রদূত, বেঙ্গল কেমিক্যাল গড়ে তুলে দেখিয়ে দিলেন এটাও সম্ভব। প্রতিষ্ঠা করেছেন বেঙ্গল পটারি, বেঙ্গল এনামেল। শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী হয়েও সন্ন্যাসী আত্মভোলা মানুষটি আয়ের শেষ কড়িটিও ব্যয় করেছেন জনকল্যাণে।
মাত্র ৭০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ১৮৯৩ সালে আচার্য্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় নিজের ল্যাবরেটরিতে একটি ওষুধ তৈরির কোম্পানী চালু করেছিলেন। সেটি ১৯০১ সালে বেঙ্গল কেমিক্যাল এণ্ড ফার্মাসিউটিক্যাল ওয়ার্কস লিমিটেড হিসেবে পরিচিত হয়। এটিই প্রথম ভারতীয় কোম্পানি যেখানে বিভিন্ন কেমিক্যাল, ওষুধ এবং বাড়িতে ব্যবহার করার নানা সামগ্রী তৈরি হতো। এগুলো বেশীরভাগই তৈরী হত স্বদেশী পদ্ধতিতে এবং দেশজ মাল-মশলা ব্যবহার করে। ১৯২৬ সালে বেঙ্গল কেমিক্যাল ১৪০০ দেশীয় শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে। বেঙ্গল কেমিক্যালের তৈরি ওষুধের দাম কম হওয়ায় সরকারী হাসপাতালগুলোতে একসময় ছিল ব্যাপক চল । মাঝে লোকসানে চললেও বিগত বেশ কয়েক বছরে আবার লাভের মুখ দেখেছে এই সংস্থা | ঐতিহ্যবাহী সংস্থাকে বিলগ্নীকরণের চেষ্টার বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়িয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি | প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে বিপণনকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে |